ঢাকা: ছাত্র জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনও রয়েছেন আত্মগোপনে। সরকার পতনের দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখনও হামলা আর গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন তারা। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যাওয়ার পর দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপন অবস্থায় অনেকেই দেশ ছাড়েন। এখনও অনেকেই চেষ্টায় আছেন দেশ ছাড়ার। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘ দিন আত্মগোপনে থাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি হতাশা বাড়ছে। দুই মাস ধরে আত্মগোপনে থাকার পর আরও কত দিন এভাবে থাকতে হবে তা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে তাদের। তাছাড়া বেশি দিন লুকিয়ে থাকাও অনেকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর গ্রেপ্তার অভিযানও জোরদার হয়েছে। নেতাকর্মী ও তাদের বাড়ি ঘরের উপর হামলাও অব্যাহত রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ। এদিকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার এক মাস পার হলে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে অনেকেই মনে করেছিলো পরিস্থিতি হয় তো একটু একটু করে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু গত ১৫ দিনে ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার বেড়েছে। এই সময়ে সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ের কয়েকশ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। অনেকের বাড়ি-ঘরে হামলাও হয়েছে বলে ওই সূত্রগুলো থেকে জানা যায়। এছাড়া নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়াও অব্যাহত আছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ১৫ আগস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা হয় ঢাকার আদালতে। এর পর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অন্তত ২২২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৯০টি মামলায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) বিভিন্ন পেশার লোকজনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। অন্যরা গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে আছেন। এখন পর্যন্ত যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ-সদস্য সালমান এফ রহমান, সাবেক স্বাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী ও ডেপুটি স্পিকার শামছুল হক টুকু, সাবেক সংসদ-সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতা সাদেক খান, সাবেক হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ-সদস্য আহমদ হোসেন, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারর, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক সংসদ-সদস্য আব্দুস সোবহান গোলাপ, হাজী মো. সেলিম, সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক সংসদ-সদস্য শাহে আলম, সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক সংসদ-সদস্য তানভীর ইমাম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, সাবেক সংসদ-সদস্য সেলিম আলতাফ জজ, সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি, কৃষক লীগের সভাপতি সমির চন্দ্র চন্দ প্রমুখ। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অন্যতম নেতা এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও গ্রেপ্তার হয়ছেন। আওয়ামী লীগের ওই সূত্রগুলো আরও জানায়, এর বাইরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের নেতাসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। যাদের নামে মামলা হয়নি তারাও আতঙ্কে আছে কখন মামলা হয় বা কোন মামলায় তারা জড়িত হয়ে যান বা গ্রেপ্তার করা হয়। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন এখন পর্যন্ত যে সব মামলা হয়েছে বা হচ্ছে তার প্রায় প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামি রয়েছে শত শত। মামলা না থাকলেও গ্রেপ্তার হলেই যে কোনো মালায় আসামি হয়ে যাবে এই ভয় তাদের মধ্যে সব সময় কাজ করছে। আবার নতুন করে কোনো মামলা আসামি হতে পারে। কখন গ্রেপ্তার বা হামলার শিকার হয় এ আতঙ্ক রয়েছে তাদের মধ্যে। এর পাশাপাশি দীর্ঘ দিন আত্মগোপনে থাকতে থাকতে অনেকে হতাশ হয়েও পড়ছেন। এই দীর্ঘ সময় নেতাকর্মীরাও পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন। অনেকের সাঙ্গেই অনেকের যোগাযোগ নেই। তবে সম্প্রতি দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকসহ কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কার্যক্রম সক্রিয় করা হয়েছে। এর মধ্যমে নেতাকর্মীরা দলের কিছু তথ্য পাচ্ছেন বলে সূত্রগুলো আরও জানায়।

প্রকাশিত:রবিবার, ০৬ অক্টো ২০২৪ ০৩:১০

ঢাকা: ছাত্র জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনও রয়েছেন আত্মগোপনে। সরকার পতনের দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখনও হামলা আর গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন তারা।  গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যাওয়ার পর দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপন অবস্থায় অনেকেই দেশ ছাড়েন। এখনও অনেকেই চেষ্টায় আছেন দেশ ছাড়ার।  আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘ দিন আত্মগোপনে থাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি হতাশা বাড়ছে। দুই মাস ধরে আত্মগোপনে থাকার পর আরও কত দিন এভাবে থাকতে হবে তা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে তাদের। তাছাড়া বেশি দিন লুকিয়ে থাকাও অনেকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর গ্রেপ্তার অভিযানও জোরদার হয়েছে। নেতাকর্মী ও তাদের বাড়ি ঘরের উপর হামলাও অব্যাহত রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ।  এদিকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার এক মাস পার হলে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে অনেকেই মনে করেছিলো পরিস্থিতি হয় তো একটু একটু করে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু গত ১৫ দিনে ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার বেড়েছে। এই সময়ে সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ের কয়েকশ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। অনেকের বাড়ি-ঘরে হামলাও হয়েছে বলে ওই সূত্রগুলো থেকে জানা যায়। এছাড়া নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়াও অব্যাহত আছে।  ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ১৫ আগস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা হয় ঢাকার আদালতে। এর পর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অন্তত ২২২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৯০টি মামলায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) বিভিন্ন পেশার লোকজনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। অন্যরা গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে আছেন।  এখন পর্যন্ত যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ-সদস্য সালমান এফ রহমান, সাবেক স্বাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী ও ডেপুটি স্পিকার শামছুল হক টুকু, সাবেক সংসদ-সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতা সাদেক খান, সাবেক হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ-সদস্য আহমদ হোসেন, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারর, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক সংসদ-সদস্য আব্দুস সোবহান গোলাপ, হাজী মো. সেলিম, সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক সংসদ-সদস্য শাহে আলম, সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক সংসদ-সদস্য তানভীর ইমাম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, সাবেক সংসদ-সদস্য সেলিম আলতাফ জজ, সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি, কৃষক লীগের সভাপতি সমির চন্দ্র চন্দ প্রমুখ। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অন্যতম নেতা এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও গ্রেপ্তার হয়ছেন।  আওয়ামী লীগের ওই সূত্রগুলো আরও জানায়, এর বাইরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের নেতাসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। যাদের নামে মামলা হয়নি তারাও আতঙ্কে আছে কখন মামলা হয় বা কোন মামলায় তারা জড়িত হয়ে যান বা গ্রেপ্তার করা হয়। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন এখন পর্যন্ত যে সব মামলা হয়েছে বা হচ্ছে তার প্রায় প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামি রয়েছে শত শত। মামলা না থাকলেও গ্রেপ্তার হলেই যে কোনো মালায় আসামি হয়ে যাবে এই ভয় তাদের মধ্যে সব সময় কাজ করছে। আবার নতুন করে কোনো মামলা আসামি হতে পারে। কখন গ্রেপ্তার বা হামলার শিকার হয় এ আতঙ্ক রয়েছে তাদের মধ্যে। এর পাশাপাশি দীর্ঘ দিন আত্মগোপনে থাকতে থাকতে অনেকে হতাশ হয়েও পড়ছেন।  এই দীর্ঘ সময় নেতাকর্মীরাও পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন। অনেকের সাঙ্গেই অনেকের যোগাযোগ নেই। তবে সম্প্রতি দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকসহ কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কার্যক্রম সক্রিয় করা হয়েছে। এর মধ্যমে নেতাকর্মীরা দলের কিছু তথ্য পাচ্ছেন বলে সূত্রগুলো আরও জানায়।

ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ ও লুটেরাদের ভয়ের কারণ বলে মন্তব্য করেছেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় ইসলামী আলোচক ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সাধারণ ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষা থাকলেও এক্ষেত্রে একটা শ্রেণি বড় বাধার কারণ।

তাদের ভয় হলো, দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের আর সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, লুটপাট ও দখলদারিত্বের কোনো সুযোগ থাকবে না।

শনিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সিরাত উদযাপন কমিটি আয়োজিত সিরাতুন্নবী (সা.) মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা আবু তাহের জিহাদির সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সঞ্চালনায় মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা পেশ করেন আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদের খতিব আওলাদে রাসূল সাইয়েদ আনোয়ার হোসাইন তাহের আল জাবেরি আল মাদানী।

এছাড়াও দেশবরেণ্য ওলামা-মাশায়েখরা বক্তব্য দেন। বক্তারা ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে এক কাতারে শামিল থাকার ঘোষণা দেন।

মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, দখলদার, লুটেরাদের ভয়ের কারণ আছে। কারণ ইসলামে সন্ত্রাসের, চাঁদাবাজির, দুর্নীতির, লুটপাটের, দখলদারিত্বের কোনো সুযোগ নেই।

এজন্যই অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হতে দেয়নি। এমনকি ইসলামী দলগুলোর মধ্যেও বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিরোধ সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, এত সব অপচেষ্টার পরও বর্তমানে দেখা যাচ্ছে ইসলামী দলগুলো বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে শামিল হওয়ার পথে রয়েছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, মানবতার মুক্তির জন্য মুহাম্মদ (সা.) আর্বিভূত হয়েছেন। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধানের নাম।

আর সেই ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে আসছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতে ইসলামী চায় এই আন্দোলনে দেশের সব ইসলামী দল ঐক্যবদ্ধভাবে শামিল হোক।

তিনি বলেন, দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে নারীরা তাদরে সামগ্রিক অধিকার পূর্ণ ভোগ করতে পারবে। অথচ ইসলাম বিদ্বেষীরা অপপ্রচার চালাচ্ছে বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে নারীদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হবে, ভিন্ন ধর্মের মানুষকে ধর্ম পালনে বাঁধা দেবে, জোর করে মুসলমান করা হবে।

কিন্তু এরাই আবার মহানবীকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে স্বীকার ও বিশ্বাস করে। মহানবী যদি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ হন তাহলে তিনি যেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন, সেই ইসলাম বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা হলে কীভাবে নারীর অধিকার ছিনিয়ে নেবে? কীভাবে ভিন্ন ধর্মের মানুষের ধর্ম পালনে বাধা দেওয়া হবে?

প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, ইসলামই একমাত্র শান্তির ধর্ম। এসময় অপপ্রচার বন্ধ করে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শামিল হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান নূরুল ইসলাম বুলবুল।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এ দেশের তরুণরা ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য বুকের রক্ত দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিদায়ী করেছে। হাসিনা বিদায় না হলে এ দেশে স্বাধীনভাবে ইসলাম প্রচার করা যেত না।

আজকের এই সিরাত মাহফিলও করতে দেওয়া হতে না। ছাত্রদের উই আর জাস্টিস প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাসুলের শিক্ষায় দেশ পরিচালনা করতে হবে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেই উই আর জাস্টিস প্রতিষ্ঠা হবে।

তিনি আরও বলেন, যুব সমাজ যেভাবে দলে দলে ইসলামের দিকে ধাবিত হচ্ছে এতে ইসলামের দুশমনদের অন্তরে জ্বালা বেড়ে যাচ্ছে না জানি ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়ে যায়। আমরা বলছি অতি অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবেই, হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র মেরামতের কথা বলছে, আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, রাষ্ট্র মেরামতে সিরাতকে সামনে রাখতে হবে। রাসুলের সিরাতকে সামনে রাখলে এ দেশে ঘরে ঘরে ওমর (রা.) মতো মানুষ তৈরি হবে।

নয়ত সালমান এফ রহমানের মতো অমানুষ তৈরি হবে। ফাতেমা (রা.) মতো নারী তৈরি হবে, নয়ত পলাতক খুনি হাসিনার মতো নির্লজ্জ বেহায়া নারী তৈরি হবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দিয়েছে এ দেশের মানুষকে চোরের খনি আর জামায়াতে ইসলামী দিয়েছে শহীদ নিজামী, মুজাহিদ আর আল্লামা সাঈদীর মতো সোনার মানুষ দুর্নীতি মুক্ত পরিশুদ্ধ নেতা।

জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কেউ দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেনি। আগামীতে পারবে না। তাই জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব বলে এ দেশের জনগণ বিশ্বাস করে। জনগণের সেই বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ শিগগিরই ঘটবে।

সিরাতুন্নবী (সা.) মাহফিলে অন্যদের মধ্যে আলোচনা পেশ করেন সাইয়েদ কামাল উদ্দিন আবদুল্লাহ জাফরি, শায়খ মাওলানা আবদুল হামিদ, মাওলানা মুসাদ্দিক বিল্লাহ আল মাদানী, মাওলানা শাখায়াত হোসাইন রাজী, ড. মুফতি আবু ইউসুফ খান, ড. খলিলুর রহমান মাদানী, প্রফেসর

ড. আব্দুস সামাদ, প্রফেসর ড. রফিকুর রহমান মাদানী, কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, মুহাদ্দিস মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, মাওলানা ড. জাকারিয়া নুর, শায়েখ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা মুফতি আমির হামজা প্রমুখ।

সিরাত মাহফিলের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে জাতীয় এ আয়োজনে পরিবেশনা উপস্থাপনা করে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী, মহানগর, অনুপম, জাগরণ, বিশ্বজয়ী হাফেজে কুরআন তাকরিম হাসান, শিল্পী মশিউর রহমান, শিল্পী গাজী আনাস, শিল্পী দিদারুল ইসলাম প্রমুখ।