আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য সহজ হবে না: তারেক রহমান

প্রকাশিত:সোমবার, ০২ ডিসে ২০২৪ ০১:১২

আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য সহজ হবে না: তারেক রহমান

ময়মনসিংহ: বিএনপির প্রতি দেশবাসীর আস্থা আছে জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে, তবে আস্থা ধরে রাখা অনেক কঠিন কাজ। দিন যত যাচ্ছে তত পরিষ্কার হচ্ছে সামনের নির্বাচন সহজ হবে না।

হতে পারে আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ দুর্বল। তারপরও আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য অনেক কঠিন।
এখন মানুষ অনেক সচেতন। মানুষ সব জানে। গত ২/৪ মাসে কেউ যদি কোনো ভুল করে থাকে, সবার দায়িত্ব তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা। যেকোনো মূল্যে জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হলে তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে দিনভর বিএনপির প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক ময়মনসিংহ বিএনপির বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তারেক রহমান আরও বলেন, বিগত ৫ আগস্টের পর সমাজে অনেক মানুষ সংস্কার নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু বিগত ৫ মাস আগে এ নিয়ে কেউ কথা বলেনি। কিন্তু বিএনপি বিগত দুই বছর আগে রাষ্ট্র মেরামতে সংস্কার নিয়ে কথা বলেছে, তখন কেউ জানত না স্বৈরাচার কখন বিদায় হবে। বিএনপি দেশের কথা চিন্তা করে সংস্কার প্রস্তাবে তা প্রমাণ হয়েছে। গত ২ থেকে ৩ মাস ধরে কিছু কিছু মানুষ সংস্কার নিয়ে যা যা কথা বলছেন, তা বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে আছে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ কারো নেই। এটি বিএনপির একক প্রস্তাব নয়, সমমনা বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করে বিএনপির ২৭ দফা থেকে ৩১ দফা করা হয়েছে। এই ৩১ দফা দেশের সব মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে হবে। বিএনপি বিশ্বাস করে জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। মনে রাখতে হবে- বিএনপি ক্ষমতায় নেই, বিএনপি এখনো ক্ষমতায় যায়নি। ক্ষমতায় যেতে পারবে কী-না তা জনগণের সমর্থনের ওপর নির্ভর করছে।

এ সময় নেতাদের কথাবার্তা ও চলাফেরার ওপর বিএনপির আগামীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে জানিয়ে তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নেতাকর্মীদের এমন কিছু করতে হবে যাতে জনগণের সমর্থন থাকে। দল রক্ষা করতে এবং দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সবার। তাই জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন। তাই আজকের এই ৩১ দফার আলোচনা এখানেই সীমাবদ্ধ না রেখে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। আগামী দিনে বিএনপি সরকার গঠন করলে কী করবে, তা রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফায় আলোচনা করা হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিসহ দেশের প্রতিটি সেক্টরকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে কাজ করবে, বলেও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এর আগে এদিন সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ বিভাগের ৭টি ইউনিটের ৫১২ জন প্রশিক্ষণার্থী নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য মো. নজরুল ইসলাম খান।

এ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ঈসমাইল জবি উল্লাহ, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ডা. মাহাদী আমিন, বিএনপির কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, সাবেক এমপি রেহানা আক্তার রানু, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবীবা।

এ সময় কর্মশালাটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহগণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী।

এছাড়াও প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাবেক এমপি নিলফার চৌধুরী মনি, মাহমুদুল হাসান রুবেল, ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটন, লাইলী বেগম, ড. শামছুজ্জামান মেহেদী, আরিফা জেসমিন, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হান্নান খান, শামীম আজাদ, শাহ শিব্বির আহম্মেদ ভুলু, লিটন আকন্দ, কায়কোবাদ মামুনসহ ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।