৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
প্রকাশিত:সোমবার, ২৩ ডিসে ২০২৪ ১১:১২
ভারত বিগত ৫৩ বছরে আমাদের বন্ধুত্ব, কৃতজ্ঞতাকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করার পরে তাদের সেনাবাহিনী এবং তাদের জনগণ নব্য বাংলাদেশে কীভাবে লুটপাট করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্বিচারে যেমন শেখ হাসিনা লুটপাট করেছে, ঠিক তেমনই সেই সময় ভারতও বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে।
তিনি বলেন, সেই সময় সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পাকিস্তানিদের কাছ থেকে যে অস্ত্র পেয়েছিল সেই অস্ত্রগুলো তারা ট্রাকে ট্রাকে ভরে ভারতে নিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় রাশিয়ান কয়েকটি এসএলআর ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। অথচ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র সেই সময় আমাদের বাংলাদেশে থাকার কথা ছিল।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সমবায় দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ভারতের আগ্রাসনে, হাসিনার দেশজুড়ে অরাজকতার প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শামসুজামান দুদু বলেন, স্বাধীনতার পরপরই পার্শ্ববর্তী বন্ধু নামধারী দেশটি সদ্য স্বাধীন দেশের সঙ্গে যে ব্যবহার করেছিল সেই একই ব্যবহার আমরা এই ডিসেম্বরেও লক্ষ্য করছি। গত চার মাস আগে ১৬ বছরের এক পৈশাচিক শাসক, পৈশাচিক দল, পৈশাচিক শাসনে যা শুরু করেছিল সেটি চার মাস আগে যখন তার পতন হয়, সেই পতন ভারত আজ পর্যন্ত মেনে নিতে পারেনি। ভারত সেই ভয়ংকর হত্যাকারী গণহত্যাকারী লুটেরা তার প্রধান শেখ হাসিনা এবং তার দলকে আশ্রয় দিয়েছে। এই আশ্রয়ের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণ হয়েছে তারা গণহত্যাকারী এবং লুটেরার পক্ষের একটা শক্তি। তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিনাশির যা করেছে, যে দল এবং যে নেত্রী তার পক্ষের শক্তি, তার পক্ষের সমর্থক, তার পক্ষের মানুষ। অর্থাৎ ভারত সবসময় আওয়ামী লীগ, শেখ মুজিব, শেখ হাসিনার বাইরে কখনও আর অন্য কোনো চিন্তা করতে পারে না। এর বাইরে কোনো চিন্তা করতে পারে নেই বলে তারা বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু হতে পারেনি।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনা কতগুলো চুক্তি করেছে, একটা দেশের সঙ্গে আরেকটা দেশের চুক্তি হওয়ার পর বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সেই চুক্তি পার্লামেন্টে উত্থাপন করার কথা। শেখ হাসিনার আমলে এ পর্যন্ত একটা চুক্তিও আমরা লক্ষ্য করিনি পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়েছে। এমনকি দেশবাসীর সামনে কোনো সাংবাদিক সম্মেলনেও উত্থাপন করেনি। বরঞ্চ শেখ হাসিনা দম্ভ করে বলেছে, আমি ভারতকে এমন কিছু দিয়েছি তা ভারত কখনোই ভুলতে পারবে না। কি দিয়েছেন আমরা জানি না। ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছেন না দলীয়ভাবে দিয়েছেন না সরকারি ভাবে দিয়েছেন সেটা আমরা জানি না।
দুদু বলেন, আপনারা হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছেন না। এর থেকে মর্মান্তিক ঘটনার কিছু আছে। ভারতে আমাদের দেশের মানুষ যায় টাকা খরচ করে হোটেলে থাকে। ডাক্তারদেরকে টাকা দিয়ে তারপর সেই চিকিৎসা নেয়। ফ্রি চিকিৎসা নিতে যায় না। আপনারা বললেন যে চিকিৎসা দেবেন না। এখন কি অবস্থা। আপনাদের হাসপাতাল ফাঁকা হয়ে গেছে। আপনাদের অনেকের চাকরি চলে যাচ্ছে। যে হোটেলগুলোতে বাঙালিরা থাকতো সেগুলো একেবারে ফাঁকা। এখন কলকাতা থেকে যেসব সংবাদ আসছে সেগুলো মর্মান্তিক। আমরা তো ভাই ইচ্ছা করে এসব বন্ধ করিনি। আপনারা বন্ধ করেছেন। আপনারা ভিসা বন্ধ করেছেন আমরা তো কিছু বলিনি। বন্ধ রাখেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ড. মো. ইউনূস সাহেব একটু হুঁশে আসুন। এই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দিক হচ্ছে একটি নির্বাচিত সরকার। সেই নির্বাচিত সরকার যতক্ষণ না আসবে গণঅভ্যুত্থান তার মর্যাদা হারাবে। যদি সেই মর্যাদা ধরে রাখতে হয় তাহলে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে সংকট কাটাতে হবে। এর কোনো ভিন্ন পথ আছে এটা আমি মনে করি না। সেজন্য আমরা নির্বাচনকে আহ্বান করেছি।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ নুর আফরোজ বেগম জ্যোতি, সাধারণ সম্পাদক ড. মো. নিজাম উদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মো. রতন মিয়া।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১