১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
প্রকাশিত:বুধবার, ২৫ ডিসে ২০২৪ ০২:১২
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, জুলুম, নির্যাতন, গণহত্যা, নিরপরাধ মানুষকে গুম খুন হত্যা করার কারণে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার হবেই হবে। তাদেরকেও ফাঁসিতে ঝুলতে হবে। এখান থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় তাদের নেই।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
রফিকুল ইসলাম বলেন, এই জাতি তাদের ক্ষমা করবে না। কারণ খোদ আওয়ামী লীগের পজিটিভ চিন্তাভাবনার মানুষজনও তাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন। যে আওয়ামী লীগের কারণে দেশ ও জাতির ইজ্জত-সম্মান নিরাপদ নয়, সেই আওয়ামী লীগের হাতে সীমান্তের নিরাপত্তা-স্বাধীনতাও নিরাপদ হতে পারে না।
আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরোধী, জন দুশমন উল্লেখ করে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, যে দলের প্রধান প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে নিজ দেশে অ্যাটাক করতে অনুরোধ করে, তারা কখনো স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করতে পারে না। তারা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে দেশের জনগণকে তাদের প্রজা মনে করেছিল।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, কেউ কেউ বলছেন, সবার রাজনীতি করার অধিকার আছে। যারা মানুষের রক্ত ও জীবন নিয়ে হোলি খেলেছে, তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। আগে গণহত্যার বিচার হতে হবে। তারপর এদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত দেবে কার রাজনীতি করার অধিকার আছে আর কার অধিকার নেই বা থাকবে না। প্রেস কনফারেন্স করে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করা দলের পক্ষে দালালি করে এরাই গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের দোসর। এরা নিজ দলের জন্য যেমন ক্ষতিকর-আবর্জনা, তেমনি দেশ ও জাতির জন্যও ক্ষতিকর-আবর্জনা। এদেরকে বয়কট করা প্রথম কাজ দলের।
এসময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রশাসনের ভেতরে, বাহিরে, রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। নয়তো বাংলাদেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কর্মী সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেদেশের সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিতে পারলে, ভারতে কেন শেখ হাসিনা আশ্রয় নিতে পারবে না!
ভারতের জনগণ বাংলাদেশের বিপক্ষে নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতীয় শাসক দল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে মোদি সরকার ভারতের অর্থনীতি ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। এখন ভারতের কৃষক, জনতা, ব্যবসায়ীরাসহ সেখানকার জনগণ মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে। ভারতীয় নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষার যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে বাংলাদেশের জনগণ সহযোগিতা করবে।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শেখ হাসিনা নিজেও আসতে চেষ্টা করছে, আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও তাকে দেশে আনার উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছে। শেখ হাসিনা দেশে আসতে চায় দেশ ও জাতির শান্তি বিনষ্ট করতে। জনগণ তাকে দেশে এনে গণহত্যার বিচার করবে। শেখ হাসিনা টেলিভিশনের সামনে এসে তার অপরাধ কি জানতে চাইছি, তার অপরাধ সে তার পিতার মতোই এদেশের মানুষকে শোষণ করেছে। আলেম-ওলামা, নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরকে হত্যা করেছে।
তিনি আরো বলেন, ভারত আমাদেরকে আলু, পেঁয়াজ, চাল, ডাল না দেওয়ার হুমকি দেয়। অথচ আমরা তাদের থেকে কিনে আনলেই তারা সমৃদ্ধ হয়। আমরা না কিনলে তাদের পথে বসতে হয়। ভারতের মিডিয়ায় অপপ্রচার চালানো হয়, বাংলাদেশ আর নেই! অথচ ইতিহাস পাঠ করে জানা যায়, ভারত একদিন থাকবে না। স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিককে হত্যা করা মানে পুরো বাংলাদেশকে হত্যা করা। সীমান্তে আর একজন মানুষকে হত্যা করা হলে, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এদেশের ১৮ কোটি জনগণ ভারতের অভিমুখে লংমার্চ করবে।
মতিঝিল উত্তর থানা আমির এস. এম শামসুল বারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. কামাল হোসাইন ও মো. শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য সৈয়দ সিরাজুল হক।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১