চেয়ারম্যানকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দিলেন মেম্বার

প্রকাশিত:সোমবার, ১৩ জানু ২০২৫ ০২:০১

চেয়ারম্যানকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দিলেন মেম্বার

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল হান্নান প্যানেল চেয়ারম্যান হতে না পেরে অনুসারীদের দিয়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।

এ ঘটনায় সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাত ৭টার দিকে ইউপি সদস্য হান্নান প্রতিবেদককে বলেন, অনিয়ম দুর্নীতির কারণে তিনিসহ লোকজন চেয়ারম্যানকে বের করে দিয়েছেন। ঘটনার সময় স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা জাবেদ ও টিপুসহ আরও লোকজন উপস্থিত ছলেন।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে কার্যালয় থেকে কোনো কারণ ছাড়াই চেয়ারম্যানকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকে কার্যালয়ের তালা খোলা হয়নি।

অভিযোগ উঠেছে, ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নানের ইন্ধনে তার সহযোগী চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জাবেদ হোসেন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক মনির হোসেন টিপুর নেতৃত্বে ৮-১০ জন দলবদ্ধ হয়ে চেয়ারম্যানকে বের করে দিয়ে কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে হান্নান প্যানেল চেয়ারম্যান হতে চায়। কিন্তু তা হতে না পেরে ক্ষোভে এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিষদে কর্মরত ২ জন জানায়, প্রতিদিনের মতো সকালেই চেয়ারম্যান নুরুল আমিন পরিষদে আসেন। পরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা তাকে কার্যালয় থেকে হুমকি দিয়ে বের করে দেয়। তারা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে চেয়ারম্যানকে পরিষদে আসতে নিষেধ করে দেন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান চলে যেতে বাধ্য হয়।

চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ইউপি সদস্য হান্নানের ইন্ধনে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জাবেদ ও টিপু কার্যালয় থেকে আমাকে বের করে দেয়। আর কখনো কার্যালয়ে না আসতে হুমকি দিয়েছে তারা। বের না হতে চাইলে তারা আমার দিকে তেড়ে আসেন। তাদের সরকার ক্ষমতায় এজন্য তারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। অন্য কোনো কারণ তারা বলেনি। পরে তারা পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান বলেন, নানা অনিয়ম (প্রকল্প আত্মসাৎ ও হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে) দুর্নীতি করেছে চেয়ারম্যান। প্রতিবাদ করায় আমার মাকে গালমন্দ করে তিনি। এজন্য তাকে পরিষদ থেকে বের করে দিয়েছি।

চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জাবেদ হোসেন বলেন, আমি স্থানীয় একটি মেলায় ছিলাম। জনগণ চেয়ারম্যানকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। খবর পেয়ে আমি পরে সেখানে যাই। এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) মাহবুবুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান পরিষদে আসছে। কিছুক্ষণ পর শুনি কারা যেন চেয়ারম্যানকে বের করে দিয়েছে। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে জনসাধারণ সেবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কায়সার হামিদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে কি কারণে ঘটনাটি ঘটেছে তা জানা যায়নি। ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানা বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।