নিজের ভাটায় গুলিবিদ্ধ সহকর্মীকে হাসপাতালে রেখে পালালেন সাবেক চেয়ারম্যান

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার, ৩০ জানু ২০২৫ ০৪:০১

নিজের ভাটায় গুলিবিদ্ধ সহকর্মীকে হাসপাতালে রেখে পালালেন সাবেক চেয়ারম্যান

যশোর: যশোরে হানিফ নামে আওয়ামী লীগের একজন কর্মীকে গভীর রাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নিজ গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম টুটুল। এ সময় গুলিবিদ্ধ হানিফ মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।

টুটুল বাঘারপাড়া উপজেলার জামদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত নাজমুল ইসলাম কাজলের ভাই এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথীর দেবর।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) টুটুলের ইটভাটায় হানিফ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ওই ঘটনার পর থেকে টুটুল পলাতক। হানিফকে পাঠানো হয়েছে ঢাকায়।

হানিফ যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ার রুস্তম আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের দায়তলায় বাড়ি করে বসবাস করেন।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) গভীর রাতে হানিফকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন কামরুল ইসলাম টুটুল। টুটুলের দাবি, তিনি হানিফকে যশোর সদর উপজেলার বিজলী পেট্রোল পাম্পের পাশে পড়ে থাকতে দেখে নিজের গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন।

তিনি হানিফকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে ওষুধ নিয়ে আসার কথা বলে চলে যান। সেই থেকে তিনি লাপাত্তা। তার মোবাইল ফোনটিও মাঝে মাঝে অন হচ্ছে, আবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

যশোর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কামরুল ইসলাম টুটুল রাত ১২টার দিকে গুলিবিদ্ধ হানিফকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এসময় হানিফ মদ্যপ ছিলেন। তিনি আবোলতাবোল বকছিলেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে তিনি উল্টাপাল্টা তথ্য দিচ্ছিলেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, হানিফের পেটের ডানপাশে গুলি লাগার চিহ্ন পাওয়া গেছে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাতেই ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী বাবুল বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কামরুল ইসলাম টুটুলের মালিকানাধীন বাঘারপাড়া থানার করিমপুরের এনআইবি ইটভাটার মধ্যে হানিফ গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার সময় টুটুল নিজেও হানিফের সঙ্গে ছিলেন। ওই সময় আরও কেউ সেখানে ছিলেন কি না বা কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা বিস্তারিত জানা যায়নি।

বাঘারপাড়া থানার ওসি আব্দুল আলিম একই তথ্য দিয়ে বলেন, এখনই বিস্তারিত কোনো কিছু জানানো যাচ্ছে না। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। সব কিছু জানার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গুলিবিদ্ধ হানিফের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি কয়েকবার জেলও খেটেছেন। যশোর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা ফন্টু চাকলাদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত হানিফ। বর্তমানে তিনি বেশিরভাগ সময় কামরুল ইসলাম টুটুলের সঙ্গে থাকেন।

কামরুল ইসলাম টুটুল আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো পদে না থাকলেও তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবেই পরিচিত। আওয়ামী লীগ নেতা ভাই-ভাবির নির্বাচন করা ছাড়াও টুটুল নিজে দলীয় প্রতীক বিহীন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ