৭ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ইং
প্রকাশিত:সোমবার, ১৭ ফেব্রু ২০২৫ ০১:০২
রোগীদের চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় চিকিৎসকদের গাইডলাইন অনুসরণের তাগিদ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম।
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা যদি গাইডলাইন অনুসরণ করে প্রেসক্রিপশনে রোগীর ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা লিখেন, তাহলে চিকিৎসা ব্যয় কিছুটা কমবে এবং রোগীরাও যথাযথ চিকিৎসা পেয়ে দ্রুত সুস্থতা অর্জন করবেন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসাবিদ্যা নিয়ে ‘প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসাবিদ্যার মূলনীতি : গবেষণা ও প্রয়োগের সেতুবন্ধন’ শীর্ষক সেন্ট্রাল সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, চিকিৎসকদের অবশ্যই গাইডলাইন অনুসরণ করে চিকিৎসা দেওয়া উচিত। মানসম্পন্ন গাইডলাইন না থাকলে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিজেদের উদ্যোগে গাইডলাইন তৈরি করে সে অনুযায়ী রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হবে। প্রেসক্রিপশনে আনরেজিস্ট্রার্ড প্রোডাক্ট বা এ জাতীয় কিছু লেখা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, রোগী ও জনগণের স্বার্থে ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসাবিদ্যার চর্চা অপরিহার্য। বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ও চিকিৎসকের অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসায় অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য প্রমাণিত গবেষণা, চিকিৎসা সংক্রান্ত অধ্যয়ন (ক্লিনিক্যাল স্টাডি) ও অভিজ্ঞতা একত্রিত করেই যথাযথ চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। ফলে চিকিৎসাসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি।
অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম বলেন, বিশ্বে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান দ্রুত পরিবর্তনশীল। চিকিৎসা পদ্ধতিকে আরও কার্যকর, নিরাপদ ও ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা একটি অপরিহার্য পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আজকের সেমিনারের আলোচনা চিকিৎসকদের জন্য গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে সঠিক সমন্বয় সাধনে অবদান রাখবে।
তিনি আরও বলেন, ক্লিনিক্যাল অভিজ্ঞতা, রোগীর চাহিদা ও সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল একত্রিত করে সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়াই প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসায় মূল উদ্দেশ্য। প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা বিদ্যার চর্চা না করলে বহির্বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশ চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে।
সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা জানান, প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা এমন একটি পদ্ধতি যেখানে ক্লিনিক্যাল অভিজ্ঞতা, রোগীর চাহিদা ও সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল একত্রিত করে সর্বোত্তম চিকিৎসা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটি শুধুমাত্র চিকিৎসা সেবা উন্নত করে না, বরং স্বাস্থ্যসেবার মান ও রোগীর সুস্থতার হারও বৃদ্ধি করে। সঠিক গবেষণালব্ধ তথ্যের ভিত্তিতে চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে শুধুমাত্র রোগ নিরাময় নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি সম্ভব।
তারা আরও বলেন, চিকিৎসকদের জন্য গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল অভিজ্ঞতার মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করা এখন সময়ের দাবি। এই উদ্যোগ চিকিৎসা পেশাজীবীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং আধুনিক স্বাস্থ্যসেবাকে আরও কার্যকর ও বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করবে।
সেমিনারে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসার ইতিহাস, তাৎপর্য, চিকিৎসা গবেষণার ভূমিকা ও এর প্রয়োগ, রোগীর স্বাস্থ্যসেবায় গবেষণার ফল কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, নীতিনির্ধারণ ও চিকিৎসা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভূমিকাসহ নানা বিষয় আলোচনা হয়।
বিএসএমএমইউর সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম মোস্তফা জামান ও ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এমএ শাকুর।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১