প্রতিদিনের যে ৫ অভ্যাস আপনার লিভারের ক্ষতি করছে

প্রকাশিত:সোমবার, ১৭ ফেব্রু ২০২৫ ০২:০২

প্রতিদিনের যে ৫ অভ্যাস আপনার লিভারের ক্ষতি করছে

লিভার আমাদের শরীরের সবচেয়ে পরিশ্রমী অঙ্গের মধ্যে একটি। এটি বিষাক্ত পদার্থ ফিল্টার করে, খাবার হজমে সাহায্য করে এবং বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। লিভারের রোগ প্রতি বছর দুই মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু ঘটায়, যা সমস্ত মৃত্যুর ৪% (বিশ্বব্যাপী প্রতি ২৫ জনের মধ্যে ১ জন)। নিজেকে নিরাময় করার অসাধারণ ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও, ক্ষতিকারক অভ্যাসের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ ধীরে ধীরে এই অঙ্গকে দুর্বল করে দিতে পারে। আমাদের অনেকে অজান্তেই দৈনন্দিন কার্যকলাপের মাধ্যমে লিভারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, প্রতিদিনের কোন কাজগুলো লিভারের জন্য ক্ষতিকর-

১. অত্যধিক প্রক্রিয়াজাত চিনি খাওয়া

অতিরিক্ত চিনি কেবল আপনার দাঁতের ক্ষতি বা ওজন বৃদ্ধি করে না- এটি লিভারের ওপর ভারী বোঝাও ফেলে। যখন খুব বেশি পরিশোধিত চিনি (বিশেষ করে ফ্রুক্টোজ) গ্রহণ করবেন, তখন লিভার সেটিকে চর্বিতে রূপান্তরিত করবে। এভাবে ধীরে ধীরে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।

২. অতিরিক্ত ব্যথানাশক ব্যবহার

আমরা প্রায়ই মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা বা জ্বরের জন্য দুইবার চিন্তা না করে ব্যথানাশক গ্রহণ করি। অ্যাসিটামিনোফেন (প্যারাসিটামল) এর নিয়মিত বা অতিরিক্ত ব্যবহার লিভারের জন্য বিষাক্ত হতে পারে। এমনকী সামান্য মাত্রাও লিভারের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে। তাইডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ খাওয়া এড়িয়ে চলুন। যদি ব্যথা উপশমের প্রয়োজন হয়, তাহলে আদা বা হলুদের মতো প্রাকৃতিক বিকল্প বেছে নিন।

৩. কম পানি পান করা

ডিহাইড্রেশনের ফলে লিভারের পক্ষে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমা হয়, যা লিভারের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস করুন। লেবু পানির মতো ভেষজ চা এবং ডিটক্স পানীয়ও লিভারের কার্যকারিতায় সহায়তা করতে পারে।

৪. অনেক বেশি প্রক্রিয়াজাত এবং ভাজা খাবার খাওয়া

জাঙ্ক ফুড, ডিপ ফ্রাই এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারে ট্রান্স ফ্যাট এবং প্রিজারভেটিভ বেশি থাকে, যা লিভারের ওপর অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয়। এই অস্বাস্থ্যকর চর্বি জমা হয় এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। রান্না বা খাবার তৈরিতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ব্যবহার করুন। ফাস্ট ফুড গ্রহণ সীমিত করুন এবং পুষ্টিকর খাবারের দিকে মনোযোগ দিন।

৫. খাবার এড়িয়ে যাওয়া

খাবার এড়িয়ে যাওয়ার অভ্যাস বিপাককে ধীর করে দিতে পারে এবং লিভারে চর্বি জমার কারণ হতে পারে। প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবে ধীরে ধীরে লিভারের কার্যকারিতাও দুর্বল হয়ে যায়। সারাদিন অল্প অল্প করে সুষম খাবার খান। প্রোটিন, ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার লিভারের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।