‘ভারতের ভিসা’ নিয়ে জয়শঙ্করকে যা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রু ২০২৫ ০৪:০২

‘ভারতের ভিসা’ নিয়ে জয়শঙ্করকে যা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ওমানের রাজধানী মাস্কটে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ওই বৈঠকে ভিসা, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া, সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলা নিয়ে জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

বিশেষ করে ভারতের ভিসা দেওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন তিনি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, “ভারত বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া কমিয়ে দিয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি মাথাব্যথার কারণ। আমরা ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনকে ভিসার পরিমাণ বাড়াতে অনুরোধ করেছি। যেটি নিরাপত্তার অজুহাতে হঠাৎ করে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি অনেক অসুস্থ মানুষকে ভোগাচ্ছে।

যাদের ভারতে চিকিৎসার জন্য ভিসার প্রয়োজন। এছাড়া ইউরোপের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশিদের নয়াদিল্লি থেকে ভিসা দেয়। কিন্তু আমাদের নাগরিকরা যদি দিল্লিতে না যেতে পারেন তাহলে তারা কী করবেন?”

ভিসা কম দেওয়ার বিষয়টি দীর্ঘদিন চলতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “যদিও এমনটি দীর্ঘদিন চলতে পারে না। কিন্তু এখন আমাদের জনগণ ইউরোপের ভিসা পেতে দিল্লির বদলে ভিয়েতনাম যাচ্ছে। এছাড়া অনেকে পাকিস্তানের ইসলামাবাদেও যাওয়ার চিন্তা করছেন। যদিও ঢাকার সঙ্গে ইসলামাবাদের সরাসরি ফ্লাইট নেই।”

এছাড়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন— এমন তথ্য মিথ্যা বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি সত্যিকার পরিস্থিতি দেখতে ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, “ভারতীয় মিডিয়ায় এই নিয়ে ক্যাম্পেইন (অপপ্রচার) চলছে। কিন্তু এগুলো সত্য নয়।

আমি ভারতীয় সাংবাদিকদের সত্য জানতে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সরকারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং মানুষ নিরাপদ। এ মুহূর্তে বড় কোনো সংঘাত নেই। আগস্টে যখন কোনো সরকার ছিল না, পুলিশ ছিল না তখন সহিংসতা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের রক্ষাকে সরকার প্রাধান্য দিচ্ছে।”

এছাড়া শেখ হাসিনা যেন ভারতে বসে কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্য না দেন সেই বার্তাও জয়শঙ্করকে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, “জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের সময় শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণ নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা তাকে ফেরত চাই।

তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতে গুরুতর অপরাধ করার অভিযোগ রয়েছে। তো আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হতে হবে। শেখ হাসিনা (ভারতে বসে) উস্কানিমূলক কথা বলেছেন এবং তরুণরা এটির জবাব দিয়েছেন। এতে সহিংসতার সৃষ্টি হয়েছে।”

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানিয়েছেন, আগস্টের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য কমেছে। তা সত্ত্বেও বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যবসার পরিমাণ আরও বাড়াতে চায়। তিনি বলেছেন, জয়শঙ্করকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি। এই সফরের তারিখ ভারত ঠিক করবে।