১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই মার্চ, ২০২৫ ইং
প্রকাশিত:রবিবার, ২৩ ফেব্রু ২০২৫ ০২:০২
‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল-ম্যাটস শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির বিরুদ্ধে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল ও কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রোববার দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ চত্বরে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করেন।
ম্যাটস শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হল- অনতিবিলম্বে দশম গ্রেডে শূন্য পদে নিয়োগ, কর্মসংস্থান ও সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ সৃজন, কোর্স কারিকুলাম সংশোধন ও প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে মেডিকেল ইনস্টিটিউট করা, প্রস্তাবিত ‘অ্যালাইড-হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড’ বাতিল করে স্বতন্ত্র ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ বোর্ড গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান।
এই দাবিগুলোকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে নিজেরাও বেশ কয়েকটি দাবি দিয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সেইসঙ্গে দাবি মানা না হলে সোমবার থেকে অ্যাকাডেমিক শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে, এমবিবিএস বা বিডিএস ছাড়া কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবেন না; বিএমডিসির আইনের বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন শুধু এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে; ২০১০ সালে হাসিনা সরকার ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করেছে, যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে; চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অপটিক্যাল কোহেরেন্স টমোগ্রাফি-ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে; এমবিবিএ ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওসিটি লিস্টের বাইরে ব্যবস্থাপত্র লিখতে পারবেন না; রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না; স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে শূন্য পদ পূরণ করতে হবে; আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠনে আগের মত সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে।
প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে; চিকিৎসক নিয়োগে বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে; সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল-ম্যাটস ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি কলেজ বন্ধ করতে হবে।
এ ছাড়া ইতোমধ্যে পাশ করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের ‘সেকমো’ পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে; চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
মেডিকেল শিক্ষার্থী শাউরিন ইসলাম শিমুন্তী বলেন, “বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দীর্ঘদিনে সমস্যা সমাধানে একটি মৌলিক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আমাদের দাবিগুলো স্বাস্থ্যখাতে একটি বিপ্লব ঘটাতে পারে। দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা ও অনিশ্চয়তা দূর হবে, তেমনি রোগী এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।”
ইমন আরা ইভা নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের যৌক্তিক দাবি মানা না পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরব না। দাবি শীঘ্রই না মানলে কাল থেকে হাসপাতাল ও ক্যাম্পাস কমপ্লিট শাটডাউন করতে বাধ্য হব।”
তিনি বলেন, “দাবি নিয়ে দেশের বেশকিছু মেডিকেল কলেজে কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন চলছে। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চললেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার রয়েছে। আমাদের দাবি পূরণের কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না।
“আমরা মনে করি, তারা আমাদের দাবিগুলোর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাদের এই উদাসীনতায় আমরা ক্ষুব্ধ।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১