২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই মার্চ, ২০২৫ ইং
প্রকাশিত:শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ ০১:০৩
গণহত্যার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনসমূহ নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং এতে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে জুলাই মঞ্চ।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেল ৪টায় উত্তরায় র্যাব হেডকোয়ার্টারের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগে শুরু হওয়া এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে জুলাই মঞ্চ। আশুলিয়ায় জুলাই আন্দোলনে সাতজনের মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় ১০ মার্চ আশুলিয়া থানার সামনে প্রথম শহীদী মার্চ পালন করে জুলাই মঞ্চ। বিগত ১৬ বছরে র্যাবের যেসব সদস্য গুম-খুন ও ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচারের দাবিতে আজকে দ্বিতীয় শহীদী মার্চ পালন করে জুলাই মঞ্চ।
শহীদী মার্চে সংহতি জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। সংস্কারের কথা বললেও সাত মাস পেরিয়ে গেলেও সাত শতাংশ সংস্কারও করতে পারে নাই। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের কাজ দৃশ্যমান করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হলে পুলিশকে ফাংশন করতে দিতে হবে। পুলিশকে ফাংশন করতে না দিলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের উচিত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশকে সহযোগিতা করা।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য জড়িত তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ২৪-এর অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ২০০০ ছাত্র-জনতার পরিবার যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন না চাইবে ততক্ষণ বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি কখনো মেনে নেওয়া হবে না। গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া মানে জুলাই শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি।
আবু হানিফ আরও বলেন, র্যাব গঠন করা হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিন্তু বিগত সময়ে সরকার তাদের দলীয় বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সদস্য খারাপ না, যারা আওয়ামী লীগের দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ কিংবা পদোন্নতি পেয়েছিল, তারাই হাসিনাকে রক্ষা করতে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে। তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। পুরো বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে র্যাবকে নিষিদ্ধ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। সবশেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও পতিত স্বৈরাচার সরকারকে র্যাবকে দলীয় কাজে ব্যবহার করেছে। র্যাবে র এই কলঙ্ক মুছতে হলে র্যাবকে বিলুপ্ত করে নতুন কোনো বাহিনী গঠন করতে হবে।
জুলাই মঞ্চের প্রতিনিধি সাকিন হোসাইন বলেন, র্যাব বাংলাদেশের জনগণের জন্য আতঙ্কের একটি নাম। তারা এমন সব কাজ করেছে যার ফলাফল হিসেবে জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো র্যাবকে নিষিদ্ধের পরামর্শ দিয়েছে। গুম কমিশনের তথ্যমতে ১৬শ গুমের অভিযোগের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ১৭৩টি গুমের অভিযোগ এসেছে র্যাবের বিরুদ্ধে। র্যাবের বর্তমান ডিজি নিজে স্বীকার করেছেন, বিগত সময়ে র্যাব গুম, খুন, ক্রস্ফায়ারের সঙ্গে জড়িত ছিল। অথচ সাত মাস পার হলেও এখনো র্যাবের যে সদস্যরা গুম-খুন ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত তাদের তালিকা প্রকাশ করেনি র্যাব। পাশাপাশি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের র্যাবের যারা গণহত্যায় জড়িত হয়েছে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। আমরা র্যাবকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি, নতুন বাংলাদেশে কোনোভাবেই গুম, খুন, ক্রসফায়ার ফিরে আসতে দেওয়া হবে না। মানবতাবিরোধী অপরাধে বাংলাদেশের শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য যেন আর কখনোই জড়িত না হয় সে আহ্বান জানাচ্ছি।
আরেক প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বর্তমানে প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না। স্বৈরাচারের আমলে নিয়োগ পাওয়া তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আওয়ামী লীগ গণহত্যায় জড়িত, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত জুলাই মঞ্চের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
জুলাই মঞ্চের প্রতিনিধি অর্নব হুসেইনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন, মুতাছিরুল ইসলাম, মুন্তাজুল ইসলাম, সুরাইয়া আন্তা, আব্দুল নুর তালুকদার, মিনহাজ, ইসমাইল শান্ত, ফুহাদ হাসান প্রমুখ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১