সাবেক এমপি ওয়াহেদসহ চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত:সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫ ০৫:০৩

সাবেক এমপি ওয়াহেদসহ চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ময়মনসিংহ-১১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এম এ ওয়াহেদ, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ছেলে রাহাত মালেকসহ চারজনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের পৃথক চার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ ওয়াহেদ, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ছেলে রাহাত মালেক, সাবেক উপ সচিব মো. দিদারুল আলম চৌধুরী এবং জনৈক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে চারটি আবেদন করা হয়। আদালত আবেদনগুলো মঞ্জুর করে তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

এম এ ওয়াহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন উপপরিচালক মোজাম্মিল হোসেন। আবেদনে বলা হয়, এম এ ওয়াহেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।

গোপন ও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এম এ ওয়াহেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে (ময়মনসিংহ, ঢাকা এলাকা ছাড়াও অন্যান্য এলাকায়) এবং দেশের বাইরে- পাপুয়া নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে। এম এ ওয়াহেদ দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করে তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন বলে অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।

তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্য ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।

রাহাত মালেকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, জাহিদ মালেক ও রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে দুদক মামলা দায়ের করেছে। রাহাত মালেক তার পিতার অবৈধ আর্থিক সহায়তায় অসৎ উদ্দেশ্যে অসাধু উপায়ে জ্ঞাতআয়ের উৎস বহির্ভূত ১১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৪ হাজার ১৬১ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখেছেন এবং ৫১টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ৬৬৩ কোটি ২৬ লাখ ৫৫ হাজার ৬৯ টাকা লেনদেন করেছেন মর্মে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

রাহাত মালেক দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন মর্মে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন। একই আদালত জাহিদ মালেকেরও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

দিদারুল আলম চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান। আবেদনে বলা হয়, দিদারুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অনুসন্ধান চলছে।

অভিযোগ অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দিদারুল আলম চৌধুরী যেকোনো সময় দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমন রহিতকরণ করা প্রয়োজন।

মোতাহের হোসেন চৌধুরীর দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞায় দুদকের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, মোতাহার হোসেনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ বিদেশে পাচার করেছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় মোতাহার হোসেন দেশ ত্যাগ করতে পারেন মর্মে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমন রহিত করা আবশ্যক।