আমিরাতে মুনিরীয়া তরিক্বতের এশায়াত সম্মেলনে মুসল্লিদের ঢল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার, ০৫ নভে ২০২৪ ০২:১১

আমিরাতে মুনিরীয়া তরিক্বতের এশায়াত সম্মেলনে মুসল্লিদের ঢল

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাহফিল উদযাপন ও খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসুল (দ.) হজরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু স্মরণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল ইউনার্স ক্লাবে মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটি বাংলাদেশ ইউএই শাখাগুলোর উদ্যোগে ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (৩ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মোর্শেদ আওলাদে রাসুল (দ.) হজরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।

আমিরাতের মাটিতে অনুষ্ঠিত সর্ববৃহৎ ধর্মীয় এ সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও স্থানীয় আরবিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ নবী প্রেমিক হাজার হাজার মুসল্লিদের উপস্থিতিতে সম্মেলন প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকা ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। সম্মেলন রূপ নেয় জনসমুদ্রে। এছাড়াও সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান ও কাতারের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

বিশ্বজোড়া তরিক্বতের কালজয়ী পথিকৃৎ খলিফায়ে রাসুল হজরত গাউছুল আজম (রা.) উল্লেখ করে এসময় প্রধান মেহমান বলেন, কুরআন সুন্নাহর পরিপূর্ণ অনুসরণ ও অনুকরণের মধ্য দিয়ে তরিক্বতের অনুশীলন করতে পারলেই দ্বীনের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন সম্ভব। প্রিয় রাসুল (দ.) এর পথ ধরে যে সমস্ত মহামানব নবীজির ভালোবাসায় ও অনুসরণে ইতিহাসে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে হজরত গাউছুল আজম (রা.) চির সমুজ্জ্বল। কাগতিয়ার নিভৃত পল্লী থেকে যে তরিক্বতের সূচনা হয়েছিল তা বিশ্বময় বিস্তৃত ও সমাদৃত। যে মনীষীর নির্জন রাত্রির নির্ঘুম কান্নার ঢেউ যেন আঁচড়ে পড়েছে আজ জাজিরাতুল আরবের পুণ্যভূমিতে। এমন এক মহান তরিক্বত নবীজির কাছ থেকে উপহার পেয়েছেন, যে তরিক্বতের সংযোগ সরাসরি নবীজির সাথে। দৈনিক এগারশত এগারবার দরূদ শরীফ আদায়, ক্বাজা হয়ে গেলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আদায় করা, মোরাকাবা, জিকিরে জলী, ফয়েজে কুরআন, তাওয়াজ্জুহ প্রদানের মাধ্যমে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের বাতেনি নূর মোমেনদের মাঝে বিতরণ এই তরিক্বতের অনন্য অনুশীলন। এটি এমন এক মহান তরিক্বত যে তরিক্বতের অনুশীলন করার জন্য কোন মহিলাকে পীর সাহেবের সামনে আসতে হয় না, আবার পীর সাহেবকে মহিলার সামনে যেতে হয় না। শরীয়তকে শতভাগ মানার মধ্য দিয়ে তরিক্বতের অনুশীলন পুরো পৃথিবীর মাঝেই বিরল।

তিনি বলেন, মহান আল্লাহর অনুগ্রহে প্রিয় নবীজির সাদকায় এই তরিক্বতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারলেই ইনশাআল্লাহ মঞ্জিলে মকছুদই হবে আমাদের একমাত্র গন্তব্য। প্রিয় নবীজির বাতেনী নূর বিতরণের মাধ্যমে আলোকিত মানুষ তৈরির অনন্য নিকেতন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের তরিক্বত। নবীর নূর বক্ষে নিয়ে নিজেকে আলোকিত করার আহ্বানে জাজিরাতুল আরবের আজকের এই এশায়াত সম্মেলন।

তিনি আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন নূর এবং পবিত্র কোরআনুল কারিমও নূর। বর্তমানে প্রিয় নবীর বাতেনি নূর এবং কোরআনুল করিমের পবিত্র নূর অর্থাৎ উভয় প্রকার নূর বিতরণের বিরল ব্যবস্থাপনা রয়েছে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে।

দুবাই কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব হারুন এম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আবুধাবি পুলিশের সিকিউরিটি ইনফরমেশন অফিসার মুহাম্মদ আল খিতবি আবু নাহিয়ান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব নুর মোহাম্মদ সিকদার ও আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবুল হোসেন।

বক্তব্য দেন আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ জাফর, মাওলানা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আলহাজ্ব মুহাম্মদ নুরুল আলম প্রমুখ।

মিলাদ ও কিয়াম শেষে প্রধান মেহমান দেশ জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কাগতিয়া আলিয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হজরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ