১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
প্রকাশিত:বুধবার, ০৫ জুন ২০২৪ ১০:০৬
নিউজ ডেস্ক: বুধবার (৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, মধ্য গাজার বুরেইজ ও মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি স্থল ও বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ হাসপাতালের মাঠের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত কয়েক ঘণ্টায় ১৫ জনেরও বেশি শহীদ এবং কয়েক ডজন আহত আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে পৌঁছেছেন।
যদি মধ্য গাজার এই এলাকায় ‘আগ্রাসন’ বন্ধ না হয়, তবে নিহতদের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই মুখপাত্র বলেছেন, আল-আকসা শহীদ হাসপাতালই একমাত্র চিকিৎসা অবকাঠামো যা বর্তমানে এই এলাকার ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে সেবা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এই হাসপাতালে আরও রোগীদের জায়গা দেওয়ার সুযোগ নেই। হাসপাতালটি ইতোমধ্যেই ‘আহত লোকে উপচে পড়েছে’, যাদের মধ্যে অনেককে মেঝেতে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের কর্মকর্তাদের মতে, পার্শ্ববর্তী মাগাজি শরণার্থী শিবিরের আরেকটি বাড়িতে হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন।
এর আগে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছিল, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো মধ্য গাজায় হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এছাড়া স্থল বাহিনী আল-বুরেইজ এলাকায় ‘গোয়েন্দাদের দিকনির্দেশনা সাথে নিয়ে মনোযোগীভাবে’ কাজ করছে।
আল জাজিরার হানি মাহমুদ দেইর আল-বালাহ থেকে বলেছেন, হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মীরা হতাহতের সংখ্যা দেখে অভিভূত হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা সর্বত্র দৌড়াচ্ছেন, জীবন বাঁচাতে জরুরি অপারেশন করার জন্য অ্যান্টিসেপটিক্স এবং চেতনানাশকসহ অবশিষ্ট চিকিৎসা সরঞ্জামের সন্ধান করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখনও ঘনবসতিপূর্ণ মাগাজি এবং বুরেইজ ক্যাম্পসহ মধ্য গাজার পূর্বাঞ্চলে চলমান হামলা এবং ভারী মেশিনগানের গোলাগুলির বিস্ফোরণ ও শব্দ শুনতে পাচ্ছি। আমরা নিহতদের আত্মীয়দের কাছ থেকে শুনেছি, সেই শিবিরগুলোতে বোমায় বিধ্বস্ত বাড়িতে অনেকেই আটকে আছে।’
এদিকে গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান আক্রমণে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ৩৬ হাজার ৫৫০ জনে পৌঁছেছে বলে মঙ্গলবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হামলায় আরও ৮২ হাজার ৯৫৯ জন আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় ৭১ জন নিহত এবং আরও ১৮২ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১