২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ ইং
প্রকাশিত:শনিবার, ১১ জানু ২০২৫ ০১:০১
প্রথমে সিসিটিভি’র ফুটেজে কারও উপস্থিতি মেলেনি। তবে কয়েকটি সিসিটিভি’র ফুটেজ পর্যালোচনার পর একটিতে দেখা গেছে;
সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে মুখোশপরা কয়েকজন যুবক মার্কেটে ঢুকেছে। ঘটনাটি সিলেটের অভিজাত আল হামরা শপিং সিটি’র। অত্যাধুনিক মার্কেট বলা চলে আল হামরাকে। কিন্তু সেই আল হামরার চতুর্থ তলার একটি জুয়েলারি দোকান থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকার জুয়েলারি রহস্যজনক চুরি হয়ে গেছে।
এ ঘটনা নিয়ে সিলেটের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জুয়েলারি দোকানে স্বর্ণ লুটের ঘটনা আগে বহুবার আলোচিত হয়েছে। নেহার মার্কেটে দিন-দুপুরে ডাকাতি হয়েছিল স্বর্ণের চালান। কিন্তু এবার নিশ্চিদ্র নিরাপত্তায় অভিজাত মার্কেটে এ ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আল হামরা শপিং সিটির দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন মানবজমিনকে জানিয়েছেন,
একটি সিসিটিভি ফুটেজে মার্কেট খোলার কিছুক্ষণ আগে ৪-৫ জন মুখোশপরা ব্যক্তির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ৯টা ৫০ মিনিটে সিসিটিভি’র ফুটেজে তাদের উপস্থিতি মিলেছে। মুখে মাস্ক থাকায় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা ধারণা করছি; মুখোশপরা ব্যক্তিরা এ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। তখন মার্কেট খোলার সময় হচ্ছিল।
মার্কেটের সিকিউরিটি গার্ডরা মার্কেটের পেছনের অংশ খুলে দিয়েছিল। ফলে অনেকেই তখন পেছন দিয়ে মার্কেটে ঢুকতে পেরেছেন। চুরি হয়েছে সত্য। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে বের করবে। আল হামরা মার্কেটের চতুর্থ তলায় হচ্ছে নুরানী জুয়েলার্সের অবস্থান।
বৃহস্পতিবার সকালে এ জুয়েলারি দোকানে চোরেরা হানা দিয়ে ২৫০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করেছে। মার্কেটে রয়েছে অত্যাধুনিক সিকিউরিটি। সহজেই মার্কেটের ভেতরে থাকা দোকানে চুরি সম্ভব নয়। এই প্রথম আল হামরা মার্কেটে বড় ধরনের চুরির ঘটনা ঘটলো। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মার্কেটের অবস্থান নগরের জিন্দাবাজারে। জনবহুল এলাকা। সিসিটিভি ক্যামেরায় আচ্ছাদিত ছাড়াও পুরো মার্কেটে সিকিউরিটি গার্ড রয়েছে। জুয়েলারি দোকানের মালিক দেওয়ান মো. জাবেদ চৌধুরী জানান, ভোরে অথবা সকালে কোনো একসময় এই চুরির ঘটনা ঘটে। চুরির পর চোরচক্র দোকানের ভেতরে থাকা ডিসি ক্যামেরা ও ডিভিআর খুলে নেয় এবং সার্টারে নতুন তালা ঝুঁলিয়ে চলে যায়।
সকাল ১১টার দিকে দোকানের মালিক-কর্মচারীরা নতুন তালা ভেঙে ঢুকে চুরির ঘটনাটি দেখতে পান। চুরি হওয়া স্বর্ণের বাজারমূল্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা। তিনি জানিয়েছেন, দোকানে প্রায় ২৫০ ভরি স্বর্ণ ছিল। চোরেরা সব লুট করে দিয়ে সার্টারে ভাঙা তালা সরিয়ে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেয়। দোকানের ভেতরে ডিভিআরসহ সিসিটিভি ক্যামেরা খুলে নিয়ে গেছে।
সুরক্ষিত এই মার্কেটে এটাই প্রথম কোনো দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা। সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আল হামরা শপিং সিটির দোকান মালিক সমিতির সভাপতি জানিয়েছেন, মার্কেটে ২২ জন সিকিউরিটি দুই শিফটে কাজ করেন। রাতে প্রতিটি তলায় দু’জন করে সিকিউরিটি দায়িত্বে থাকেন।
চুরি হওয়া দোকানটি শপিং সিটির ৪র্থ তলায়। ওই তলায় ২টি ক্যামেরা নষ্ট পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বাকি ক্যামেরাগুলো সচল ছিল। সব সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় মার্কেটের কেউ জড়িত আছে কিনা, সেটাও মাথায় রেখে আমরা পদক্ষেপে যাচ্ছি।
এদিকে চুরির ঘটনা নিয়ে প্রথমে রহস্য দেখা দেয়। কারণ; সিসিটিভি’র ফুটেজে চুরির কোনো অস্তিত্ব মিলেনি। পরে অবশ্য মার্কেট খোলার একটু আগে কয়েকজন মুখোশপরা ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত হয়। এ ব্যাপারে গতকাল বিকালে দোকানের মালিকের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. জিয়াউল হক মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মৌখিক অভিযোগ শুনেই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। আশাকরি ঘটনাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতো পারবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১