স্মার্টকার্ডের ফি কমানোসহ ৫ দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি

প্রকাশিত:বুধবার, ১৫ জানু ২০২৫ ০৩:০১

স্মার্টকার্ডের ফি কমানোসহ ৫ দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের স্মার্ট পরিচয়পত্রের ফি কমানোসহ সব সেবা নিশ্চিত করার দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে উপাচার্যের কার্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের হাতে এই স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন উপাচার্য।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-

১। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে স্মার্ট পরিচয়পত্র প্রদান করা হোক। এটি একেবারে সম্ভব না হলে বিদ্যমান ফি কমিয়ে এটিকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে নির্ধারণ করা হোক।

২। প্রথম বর্ষে ক্লাস শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে স্মার্ট পরিচয়পত্র সরবরাহ করতে হবে।

৩। স্মার্ট পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে সহজ এবং নির্বিঘ্নে শিক্ষার্থীকে ন্যূনতম ফি নিয়ে পুনরায় স্মার্ট পরিচয়পত্র দিতে হবে।

৪। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক পরিচয়পত্র বাতিল করে শুধু মাত্র স্মার্ট পরিচয়পত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে সনদ-নম্বরপত্র উত্তোলন, কেন্দ্রীয় ও বিজ্ঞান লাইব্রেরি রিসোর্স অ্যাক্সেস-বিভাগের সেমিনার/লাইব্রেরির রিসোর্স অ্যাক্সেস, মেডিকেল সেন্টারের সেবা প্রাপ্তি, হল অফিস এবং নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন যাচাই ও নিরীক্ষণ কাজে এটির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

৫। আগামী এক মাসের মধ্যে আমাদের দাবির কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে সেটি আপডেট জানাতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের থেকে গত ৮ বছর যাবত ৬০০ টাকা নিয়ে স্মার্ট পরিচয়পত্র প্রদান করে থাকে। এই বাড়তি ফি অযৌক্তিক। বর্তমানে বাজারে ১৫০-২০০ টাকার মধ্যে অত্যাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন চিপযুক্ত কার্ড পাওয়া যায়। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রিন্টারে পরিচয়পত্র বানানো হয়, এই প্রিন্টার একবার কিনলেই আর প্রতিবছর কিনতে হয় না। ফলে প্রতি বছর স্মার্ট পরিচয়পত্র বাবদ ৬০০ টাকা ফি নেওয়া আমরা অযৌক্তিক বলে মনে করি। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব ফান্ড থেকে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে স্মার্ট পরিচয়পত্র প্রদান করা উচিত।

দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক বছর প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের থেকে স্মার্ট পরিচয়পত্রের জন্য ফি নেওয়া হয়। কিন্তু সময়মতো স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হয় না।

তৃতীয়ত, স্মার্ট পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে অত্যন্ত ভোগান্তি প্রক্রিয়ায় যেতে হয় (থানায় জিডি, বিভাগের প্রত্যয়ন, প্রশাসনিক ভবনে দরখাস্তসহ অনেক কাজ করতে হয়) এবং এক হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করতে হয়। এটি শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়নমূলক প্রক্রিয়া।

চতুর্থত, স্মার্ট পরিচয়পত্রের মাধ্যমে লাইব্রেরি অ্যাক্সেস-মেডিকেল সুবিধাসহ নানা সুবিধা নিশ্চিত করার ছিল। তবে বিগত ৫-৬ বছরেও এই পরিচয়পত্রের কোনো ব্যবহার দেখা যায়নি। বরং হলের পরিচয়পত্র, লাইব্রেরির জন্য আলাদা পরিচয়পত্র, বিভাগের লাইব্রেরি/সেমিনারে আরেক পরিচয় পত্র, মেডিকেল সেন্টারের জন্য আলাদা বহি নিয়ে সেবা নিতে হয়। একটি ইউনিভার্সিটিতে একাধিক পরিচয়পত্রের ব্যবহার হয়রানিমূলক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্মার্ট পরিচয়পত্রের জন্য শিক্ষার্থীদের থেকে ৬০০ টাকা নেয়। যা বাজারে ১৫০-২০০ টাকায় অত্যাধুনিক কার্ড পাওয়া যায়। বিগত সাত আট বছরে এই পরিচয়পত্রের কোনো ব্যবহার দেখি নাই। অথচ এ কার্ড হারিয়ে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানাসহ চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আজ আমরা উপাচার্য স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মার্ট পরিচয়পত্রের যাবতীয় সমস্যা সমাধান করার নিমিত্তে পাঁচ দফা দাবি জানাই। উপাচার্য স্যার এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

স্মারকলিপি দেওয়ার সময় সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের, শামসুন নাহার হলের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী সুলতানা, শেখ মুজিবুর রহমান হলের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম, মুহসীন হলের ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ, সূর্যসেন হলের ২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী আবু মিশাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ