১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই মার্চ, ২০২৫ ইং
প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রু ২০২৫ ০৩:০২
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে হামলা-মামলার শিকার হওয়া নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য করায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদ্য মনোনীত আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়াকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির নির্যাতিত পরিবারের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বিএনপির নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমরা জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছি। বিএনপিকে অন্তরে ধারণ করেছি বিধায় জেল-জুলুম খেটেছি। কিন্তু কয়েকদিন আগে যারা আহ্বায়ক কমিটিতে পদ পেয়েছেন, তারা দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের দালালি করেছেন। সেই আওয়ামী লীগের দালালি করা লোকজন এখন পদ-পদবি নিয়ে বিএনপিকেই অপমানিত করছে।
বক্তারা বলেন, ১৭টি বছর আমরা মামলা হামলার শিকার হয়েও রাজপথে আন্দোলনে ছিলাম। সর্বশেষ ৫ আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিতাড়িত করেছি। রাজনৈতিক মামলায় আদালত প্রাঙ্গণে এখনও হাজিরা দিতে হয়। আর দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটিতে ফ্যাসিবাদের দোসররা বলছে, আমরা না-কি নিজেদের দোষেই মামলা খেয়েছি। বিশেষ করে নতুন কমিটির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া সম্প্রতি নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণমাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তাকে এখনই দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।
তারা বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা রাজপথে ছিলাম। তাই আমরা মামলা হামলার শিকার হয়েছি। আর এখন যারা কমিটিতে এসেছেন, তারা আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দালাল ছিলেন। যে কারণে হাসিনার সরকার তাদের কোনো ক্ষতি করেনি।
মানববন্ধনে গাজী আবু তাহের, আবদুল মাবুদ, ইব্রাহিম সওদাগর, ইয়াসিন আরফাত, এস এম নয়ন, চৌধুরী হারুন, আলম খান, ওবায়দুল হক রিকু, মাকসুদুল হক রিপন, ফয়সাল সিকদার সোহান, মহিউদ্দিন সাগর, আব্দুল্লাহ আল নোমান জিহাদ, এমরান, খোরশেদ, মিনহাজ উদ্দিন ইমনসহ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নির্যাতিত নেতারা বক্তব্য রাখেন।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে বলেছেন ২০১৮ সালের পর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়নি। যারা মামলার আসামি হয়েছেন, তারা অতি উৎসাহী হয়ে মামলার আসামি হয়েছেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক আদেশে দক্ষিণ জেলা বিএনপির পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। এতে ইদ্রিস মিয়াকে আহ্বায়ক করা হয়। ইদ্রিস মিয়ার ভাতিজা সাইফুল ইসলাম সুমন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারে দায়িত্ব পালনকারী একাধিক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
বিশেষ করে সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অন্তত এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন তিনি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে সাবেক মন্ত্রী জাবেদ ও ড. হাছান মাহমুদসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে সাইফুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযোগ উঠেছে ইদ্রিস মিয়ার পদ পাওয়ার পেছনে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেছেন সাইফুল ইসলাম সুমন। তবে এই অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য কল করা হলে সাইফুল ও ইদ্রিস মিয়া দুজনের কাউকে পাওয়া যায়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১