১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই মার্চ, ২০২৫ ইং
প্রকাশিত:বুধবার, ২৬ ফেব্রু ২০২৫ ০১:০২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে তিন ঘণ্টা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মী ও আলেম-ওলামারা মহাসড়কটি অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে বেলা একটার দিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। এতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনকারীদের একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জুলকার নাঈম বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে ওলামায়ে কেরাম আন্দোলন করেন। তখন আওয়ামী লীগের নেতারা আলেমদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালান এবং উল্টো ওলামায়ে কেরাম ও মাদ্রাসার ছাত্রদের আসামি করে মিথ্যা মামলা করেন। ফ্যাসিস্ট সরকার বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হলেও সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার হয়নি। যদি রাজনৈতিক মামলাগুলো একের পর এক প্রত্যাহার হয়, তাহলে আলেম-উলামায়ে কেরামদের মামলাগুলো এখনো কেন প্রত্যাহার হচ্ছে না। তাই দ্রুত এই মামলাগুলো প্রত্যাহারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন। অন্যথায় পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও হেফাজতে ইসলাম সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় আলেম-ওলামা ও হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে অবরোধ করেন। এতে কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। চালক ও দূরপাল্লার যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধকারীরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন। এর আগে অবরোধকারীদের ছয় সদস্যের একটি দল পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবি তুলে ধরেন। দাবি আমলে নেওয়ার আশ্বাস পেয়ে অবরোধকারীরা মহাসড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। আগামী রোববার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
অবরোধকারীদের ভাষ্য, ২০১৬ ও ২০২১ সালে পৃথক সহিংসতার ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় আলেম-ওলামা ও হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৭৫টি মামলা হয়। এসব মামলায় তিন হাজারেরও বেশি হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মী ও আলেম-ওলামাদের আসামি করা হয়। ২০১৬ সালে তুচ্ছ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব, ভাঙচুর, লুটপাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। আর ২০২১ সালের ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে জেলার অর্ধশতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় করা মামলায় হেফাজতে ইসলামের এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মী কারাভোগ করেন। এসব মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে করা হয়েছে, তাই মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, দীর্ঘদিনের কিছু মামলা ঝুলে আছে। সেগুলো শান্তিপূর্ণ ন্যায়বিচারের মাধ্যমে দ্রুত যেন সুরাহা হয়, সে জন্য তাঁরা কর্মসূচি পালন করেছেন। প্রাথমিকভাবে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন। তাঁরা সেটি শুনে মহাসড়ক থেকে সরে গেছেন। জেলা প্রশাসককে নিয়ে দাবিগুলোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১