৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে আগস্ট, ২০২৫ ইং
প্রকাশিত:বুধবার, ১২ জুন ২০২৪ ১১:০৬
নিউজ ডেস্ক: প্রতিটি আফ্রিকান সাভানা হাতির আলাদা আলাদা নাম আছে এবং তারা পরস্পরকে নাম ধরে ডাকে। নতুন এক গবেষণায় এমনই দাবি করা হয়েছে। বন্য প্রাণীদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র নিজেদের মধ্যে নাম ধরে যোগাযোগ করতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
আফ্রিকান সাভানা হাতি নিয়ে নতুন এই গবেষণা প্রতিবেদনটি গত সোমবার নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভল্যুশন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণাপত্রে বলা হয়, সাভানা হাতির পাল যখন নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে শব্দ করে, তখন তার মধ্যে নামও থাকে। নিচু স্বরে কিন্তু উচ্চ তরঙ্গে করা ওই শব্দ হাতিরা অনেক দূর থেকেও শুনতে পায়।
হাতি দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, কোনো হাতি যখন দল থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে যায়, তখন খুব সম্ভবত নাম ধরে ডেকে তারা আবার একত্র হয়।
এ বিষয়ে ডিউক ইউনিভার্সিটির ইকোলোজিস্ট স্টুয়ার্ট পিম বলেন, ‘যদি আপনি একটি বড় পরিবারের খোঁজ করতে যান, আপনি হয়তো বলতে পারবেন, ‘ওহে, ভার্জিনিয়া, এখানে আসো!’
স্টুয়ার্ট পিম এই গবেষণা দলের সদস্য ছিলেন না।
বন্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে একে অন্যকে নাম ধরে ডাকার বিষয়টি খুবই বিরল। মানুষের নাম থাকে। এ ছাড়া পোষা কুকুর নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয়। ডলফিন শিশুদেরও নাম থাকে। নির্দিষ্ট শিস দিয়ে একে অন্যকে ডাকে। তোতা পাখিরাও সম্ভবত নাম ব্যবহার করে। যেসব প্রাণী নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয়, সেগুলোর সারা জীবনই নতুন নতুন শব্দ শেখার এবং সেগুলো উচ্চারণ করার ক্ষমতা রাখে। প্রাণীদের মধ্যে বিরল এই সক্ষমতা হাতিরও রয়েছে।
নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভল্যুশন জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনের গবেষকেরা কেনিয়ার সাম্বুরু ন্যাশনাল রিজার্ভ এবং আম্বোসেলি ন্যাশনাল পার্কে থাকা সাভানা হাতির যে শব্দ লাইব্রেরিতে রেকর্ড করা আছে, সেগুলো যন্ত্রের মাধ্যমে সূক্ষ্মভাবে শুনেছেন এবং হাতিদের নামের ব্যবহার করার বিষয়টি শনাক্ত করেছেন।
হাতিদের মধ্য কে নাম ধরে ডাকছে আর কে সাড়া দিচ্ছে, সেটা বুঝতে গবেষকেরা জিপে করে হাতিদের অনুসরণ করেছেন এবং তাদের ভিডিও ধারন করেছেন। যেমন মা হাতি তার বাচ্চা হাতিকে ডাকছে। অথবা পালের প্রধান হাতি দলের ছোট কোনো সদস্যকে ডাকছে।
গবেষকেরা যখন শুধু শব্দের উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছেন, কম্পিউটার মডেল ২৮ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো হাতিকে ডাকা হচ্ছে, সেটা শনাক্ত করতে পারছে। এ ক্ষেত্রে ডাকার সময় হাতি নাম ব্যবহার করছে বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।
গবেষক দলের একজন কর্নেল ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী মিকি পারডো বলেন, ‘ঠিক মানুষের মতো হাতিও নাম ব্যবহার করে। তবে খুব সম্ভবত বেশির ভাগ শব্দ করার সময় তারা নাম ব্যবহার করে না। তাই আমরা শতভাগ আশা করতে পারি না।’
হাতির ডাকের মধ্যে, এমনকি এমন নানা শব্দও রয়েছে, যা মানুষের শ্রবণক্ষমতার নিচে থাকে।
গবেষকেরা তাঁদের গবেষণার ফলাফল পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন হাতির আচার-আচরণ ভিডিও করেছেন। তাঁরা সেই ভিডিওগুলো চালিয়ে দেখার চেষ্টা করেছেন, কোন হাতি কতটা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দেয়, কান নাড়ে এবং শুঁড় উঁচু করে।
গবেষণা দলের আরেক সদস্য জর্জ উইটমেয়ার বলেন, ‘হাতি অসাধারণ সামাজিক প্রাণী। তারা সব সময় পরস্পরের সঙ্গে কথা বলে, স্পর্শ করে। এই নাম ধরে ডাকা খুব সম্ভবত তাদের পরস্পরের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করার সক্ষমতার আরেকটি প্রমাণ।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১