৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
প্রকাশিত:শনিবার, ২৫ মে ২০২৪ ০২:০৫
নিউজ ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে যাচ্ছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়াবিষয়ক দুই সংস্থা। এ সংক্রান্ত আবহাওয়া বুলেটিনে বলা হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই নিম্নচাপটির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রেমাল নামের এই ঘূর্ণিঝড় রোববার মধ্যরাতে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের সমুদ্র তীরবর্তী এবং আশপাশের অঞ্চলে আঘাত হানবে।
দুপুরের দিকে দেওয়া এক বুলেটিনে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) বলেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
এরপর প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ সংলগ্ন উপকূলের স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে রেমাল। ওমান এই নামকরণ করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে। ইতোমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও মেঘালয়ের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের মূল প্রভাব বাংলাদেশের বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলো এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ সংলগ্ন ও এর আশপাশের অঞ্চলে পড়বে।
ফুঁসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, গতিবিধি দেখুন লাইভ
শনিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের সর্বশেষ আপডেটে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি এই মূহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ থেকে ৪২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। আর বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকেও একেবারে প্রায় একই অর্থাৎ ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব দিকে অবস্থান করছে। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রে বর্তমানে ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এরপর প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে রোববার মধ্যরাতের দিকে বাংলাদেশের বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের পাশাপাশি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করবে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে এর প্রভাব সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে পড়তে শুরু করবে। আর মধ্যরাত থেকে পুরোপুরি প্রভাব পড়া শুরু হতে পারে। সেজন্য সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নিম্নচাপটি এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আরও ঘনীভূত হয়ে শক্তিশালী হচ্ছে।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং নদিয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। এই আট জেলায় বজ্রপাতসহ বৃষ্টির পাশাপাশি ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি।
পশ্চিমবঙ্গে এই ঝড়ের সম্ভাব্য তাণ্ডব মোকাবিলায় ইতোমধ্যে কোস্ট গার্ডের ১০টি জাহাজ এবং দুটি ডর্নিয়ার বিমান বঙ্গোপসাগরে মোতায়েন করা হয়েছে। বিমান থেকে বাংলা ভাষায় পাইলটরা বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম. দেলোয়ার হোসেন
অফিস: অফিস: রোম নং-৫, নীচতলা, ১৭-১৮, বাইন কোর্ট, হোয়াইটচ্যাপল, লন্ডন।
মোবাইল: ০৭৩৭৭-৯৫১৬৮১