‘আ.লীগের সবাই প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা নয়’

প্রকাশিত:বুধবার, ২৯ মে ২০২৪ ০৩:০৫

‘আ.লীগের সবাই প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা নয়’

নিউজ ডেস্ক: বুধবার (২৯ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউরীর ভিআইপি ব্যাঙ্কুয়েট হলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘শিল্প, বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে শহীদ জিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।

গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যারা ছিলেন সবাই রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। আপনারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, বিপক্ষের শক্তি নিয়ে আলোচনা করুন। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল কেন? স্বাধীন, সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য। আজ এ যে গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্রে সার্বভৌমত্ব আছে কি না বলতে সন্দেহ লাগে। শুধু একটি পতাকা উড়লেই দেশকে স্বাধীন বলা যায় না। জাতীয় সংগীত শুনলেই বোঝার কোনো উপায় নেই যে দেশে স্বাধীনতা আছে। সে কারণে আজ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি মানেই তারা যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মঙ্গল যারা চায়নি, তারাই জিয়াউর রহমানকে সেদিন চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে নির্মমভাবে খুন করেছে। জিয়ার জীবনের শুরুই এ চট্টগ্রামে, শেষও চট্টগ্রামে। তিনি বলতেন, স্লোগানে মুক্তি আসবে না, আমাদের উৎপাদনমুখী হতে হবে, কর্মমুখী হতে হবে। প্রত্যেক মানুষের হাতে কাজ পৌঁছে দিতে হবে।’

জিয়াউর রহমানের ছবি পাহারা দিতে পুলিশ লাগে না মন্তব্য করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের হৃদয়ে জিয়ার নাম লেখা আছে। এ নাম লেখা যায়, মোছা যায় না। জিয়ার ছবি পাহারা দেওয়ার জন্য পুলিশ লাগে না। আর মাঝে মাঝে কিছু মামলা হয় অমুকের ছবি ছিঁড়েছে। নাম বললাম না। জিয়ার ছবি ছেঁড়ার জন্য কারও বিরুদ্ধে মামলা করতে হয়নি। কারণ জিয়ার ছবিতে হাত দিতে কেউ সাহস করে না।’

উপজেলা নির্বাচনে টাকা দিয়েও আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্রে মানুষ নিয়ে যেতে পারছে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ৭ শতাংশ মানুষও ভোট দিতে যায়নি। মানুষের ভোট চুরি করে ৪২ শতাংশ ভোট কাস্ট দেখানো হয়েছে। আজ উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। টাকা দিয়েও সেখানে মানুষ নিয়ে যেতে পারছে না। ভোটকেন্দ্রগুলোও শূন্য। বিএনপির ইশারায় যদি মানুষ ভোট দিতে না যায়, তাহলে শেখ হাসিনা ভেবে দেখুন, আমাদের আরেক ইশারায় আপনার কী হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কখনও ক্ষমতায় ঠিকে থাকা যাবে না।’

১৯৭৪ সালের মতো দেশে আরেকটা দুর্ভিক্ষ হতে যাচ্ছে দাবি করে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘করুণ অবস্থায় আজ দেশের অর্থনীতি। কোনও যুবক আজ দেশে থাকতে চায় না। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের চেয়েও বড় দুর্ভিক্ষের আশঙ্ক্ষা করা হচ্ছে। হয়তো অনেকে বুঝতে পারছে না। কারণ ভূখার মিছিল বের হচ্ছে না। রিজার্ভ আছে এখন মাত্র সাড়ে ১০ বিলিয়ন ডলার। অথচ আমাদের প্রয়োজন ৩৫ বিলিয়ন ডলার। ব্যাংকিং খাতের কী অবস্থা সেটি তো দেশের মানুষ দেখছেই। দুইদিন পর ব্যাংকের লকারেও কোনো টাকা থাকবে না। যদি দেশের এ অবস্থা চলে, তাহলে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষকেও হার মানাবে।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, ভিপি হারুনুর রশীদ, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বান আবু সুফিয়ান।

এর আগে, জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দুপুর ১২টায় একই স্থানে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে বই মেলা ও বই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।